পাঁচ জঙ্গি ভারতের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে নিয়মিত টুইট করেছে
বিপ্লব বিশ্বাস : গুলশানের রেস্তোরাঁ হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর পুলিশ এবং র্যাবের তাড়া খেয়ে জামাত-উল-মুজাহিদিনের (জেএমবি) ১১ জন শীর্ষনেতা ভারত-সীমান্তের কাছে ঘাপটি মেরে বসে রয়েছে বলে জানতে পেরেছে গোয়েন্দা সংস্থা। সন্ত্রাস এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন শাখা ইতোমধ্যেই এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। রাজশাহী, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রামসহ যেসব এলাকায় জেএমবির প্রভাব বেশি, সেখানেই নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। সেই মতো গত রোববার বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের তদন্তকারী সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এনআইএকে দুই সন্দেহভাজন জঙ্গির তথ্য পাঠানো হয়। গ্রেফতারকৃত এক জঙ্গির কাছ থেকে তথ্য নিয়েই তদন্তকারী সংস্থা এই তথ্য তৈরি করেছে। ওই তথ্যে ওই দিনই বিএসএফকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে, এই ঘটনার সঙ্গে ভারতের কোনো জঙ্গির যোগাযোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে এনআইএর একটি দল শিগগিরই ঢাকায় আসতে পারে বলে সূত্রের খবর। এর আগে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের সময়ও এনআইএ তদন্তের স্বার্থে ঢাকায় এসেছিল। তদন্তকারী সংস্থা জানতে পেরেছে, গুলশান হামলায় জড়িত পাঁচ জঙ্গি পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও দক্ষিণ ভারতের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে নিয়মিত টুইট করেছে। এনআইএ এই ঘটনা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে বাংলাদেশের তদন্তকারী সংস্থা জানতে পেরেছে, জঙ্গিদের কাছে গ্রেনেডের মশলা পাওয়া গিয়েছে। একই সঙ্গে তারা একে ২২ রাইফেল ব্যবহার করেছে। তাদের প্রত্যেকের কাছে দুটি করে ম্যাগাজিন ছিল। গুলি শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা বন্দিদের এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে।
এদিকে, সাতক্ষীরা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। অভিযানে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবি অংশ নিচ্ছে বলে জানা যায়। জঙ্গিরা যাতে ভারতে ঢুকতে না পারে, তার জন্য বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ সমন্বয় রেখে চলেছে পুলিশ।
সূত্র জানায়, গ্রেফতার এড়াতে ডজন খানেক শীর্ষ জামায়াত নেতা সীমান্ত এলাকায় গা ঢাকা দিয়েছে। তারা ভারতে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের আড়ালে ওই শীর্ষ নেতারা গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারে। জামায়াত প্রভাবিত সাতক্ষীরার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাটের সীমান্ত রয়েছে। একইভাবে রাজশাহীর মুর্শিদাবাদ ও মালদহের কিছুটা সীমান্ত রয়েছে। পাশপাশি ঝিনাইদহতেও সাম্প্রতিককালে জেএমবি সক্রিয় রয়েছে বলে জানতে পেরেছে গোয়েন্দারা। এর আগে গত জানুয়ারিতে সীমান্তবর্তী জেলার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকদের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার পুলিশ সুপার ও জেলা শাসকদের বৈঠক হয়েছিল। সেখানেই ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা ও রাজশাহীকে অতি স্পর্শকাতর বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। তাই এই সীমান্তগুলোতে নজরদারী বেশি করা হয়েছে। সম্পাদনা : বিশ্বজিৎ দত্ত