মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জেলা আদালতে ১ রোহিঙ্গা মুসলমানের মৃত্যুদ-ের রায় ঘোষণা
ইমরুল শাহেদ: মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ফাঁড়িতে হামলা চালানোর কথিত অভিযোগে রাখাইন রাজ্যের একটি জেলা আদালত মামমুদ নুয়াল নামে একজন সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানকে মৃত্যুদ- দিয়েছে। মিয়ানমারের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, গত বছর অক্টোবর মাসে এই হামলার ঘটনা ঘটেছিল। তাকে তখন গ্রেফতার করা হয়। উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের এই ফাঁড়িটি বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে। তখন থেকেই হামলার অভিযোগে রাখাইন রাজ্যে মুসলমানদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ব্যাপক ধারপাকড় ও হত্যাকা- চালিয়ে আসছে।
রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, মৃত্যুদ-ের আদেশ হয়েছে গত শুক্রবার। এর বেশি আর কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি উক্ত কর্মকর্তা। সিত্তের পুলিশ প্রধান ইয়ান নাইং লেত সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মামমুদ নুয়াল নামে এ ব্যক্তির বিরুদ্ধে সিত্তে আদালত শুক্রবার মৃত্যুদ-ের রায় দিয়েছে। আদালত বলেছে, ‘ইচ্ছাকৃত হত্যা’র জন্য মামমুদ নুয়ালকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়েছে। তবে পুলিশ প্রধান মুসলিম এ নাগরিকের মৃত্যুদ-ের দিন-তারিখ সম্পর্কে কিছুই বলেননি। মামমুদ নুয়ালের ডাক নাম ওমর। মিয়ানমারের একটি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, মামমুদ নুয়ালকে জেলা আদালত দ-বিধি আইনের ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়। ফাঁড়ির হামলায় মিয়ানমারের একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। তারপরই আশপাশের গ্রাম থেকে ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। মৃত্যুদ- পাওয়া মামমুদ নুয়ালকে অস্ত্র ব্যবহারের জন্য অতিরিক্ত পাঁচ বছর জেল দেওয়া হয়। কিন্তু মিয়ানমারের কাগজপত্রে মৃত্যুদ-ের কথা উল্লেখ থাকলেও ১৯৮০ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত কারও মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়নি।
পুলিশ প্রধান দাবি করেছেন, মামমুদ নামের এ রোহিঙ্গা মুসলমান হামলায় অংশ নিয়েছিলেন এবং ওই হামলায় তিনি নেতৃত্ব দেন। এছাড়া, হামলার পরিকল্পনাও তিনি করেছেন বলে দাবি করেন পুলিশ প্রধান। বাকি ১৯ জনকেও আদালতে হাজির করা হয়েছিল কিন্তু এখনো তাদের বিরুদ্ধে আদালত কোনো রায় দেয়নি।
মিয়ানমারের বৌদ্ধ সরকারকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক মনে করে না এবং সরকার স্বীকৃত ১৩৫টি উপজাতির মধ্যে রোহিঙ্গারা তালিকাভুক্ত নয়। বাংলাভাষী এই জাতিটিকে প্রতিবেশী দেশের নাগরিক মনে করে যদিও তারা প্রজন্মান্তরে মিয়ানমারেই বাস করছে। সূত্র: ব্যাংকক পোস্ট