তরিকুল ইসলাম সুমন: অধিক বয়সের কারণে ঢাকা চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ৩২টি প্রাণী রয়েছে যা মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রদর্শনীর জন্যও এসব প্রাণী অনুপযুক্ত। এদের বয়স ১৭ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে। অতিরিক্ত বয়সের কারণে এসব প্রাণীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে। এ কারণে এদের পেছনে সরকারি অর্থের একটি বিরাট অংশ ব্যয় ও জনবলকে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে বলে চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গেছে।
চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা যায়, অধিক বয়সের প্রাণীগুলো হলোÑ ঘরিয়াল, ইশ্চুরাইন কুমির, সোনালী বুক বানর, অলিভ বেবুন, বাগদাস, ভোদর, সংখিনী সাপ, কোশোয়ারী, সার সক্রেন, লিলফোর্ড সারস, সাদা পেলিক্যান, মদনটাক, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, ভারতীয় সিংহ, চিত্রা হায়েনা, ডোরাকাটা হায়েনা, কালো ভল্লুক, গন্ডার, শিম্পাঞ্জি, নীল গাই, হাতি, জলহস্তি রয়েছে। এদের মধ্যে ঘড়িয়াল ৩৬ বছর, ইশ্চুরাইন কুমির ৮২বছর, সোনালী বুক বানর ৩১ বছর, সংখিনী সাপ ২০ বছর, মদনটাক ২৭ বছর, সিংহ ২১ বছর, গন্ডার ৩২ বছর, শিম্পাঞ্জি ৩৮ বছর এবং জলহস্তি ৩৩ বছর। ভ্যাটেনারি ডাক্তার ও প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠাদের চেয়ে আবদ্ধ অবস্থায় প্রাণীদের জীবনী শক্তি কমতে
গ করবেন। সম্পাদনা: হাসান আরিফ
থাকে। ঢাকা চিড়িয়াখানায় বর্তমানে এসব প্রাণীদের প্রকৃত বয়সসীমা অনেক আগেই পার হয়েছে। এদের অধিকাংশেরই আবদ্ধকালীন বয়স ১৫-২০ বছরের মধ্যে। তবে ব্যতিক্রমও রয়েছে ইশ্চুরাইনের জন্য ৬০-৮০, পাখিদের ১৫-২০, হাতি ৬০ বছর, গন্ডার ২০-২৫ বছর, শিম্পাঞ্জি ১৫-১৬, জলহস্তি ২৫-৩০ বছর বাঁচতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানান, বিশ্বের অন্যান্য দেশের চিড়িয়াখানায় বয়ষ্ক প্রাণীদের মেরে ফেলা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে চিড়িয়াখানার বয়ষ্ক প্রাণীদের কি করা হবে সে বিষয়ে কোনো নীতিমালা না থাকায় এসব প্রাণীকে লালন পালন করা হচ্ছে। এটি অর্থের অপচয়। ভবিষ্যতে এসব প্রাণী মেরে ফেলার জন্য চিড়িয়াখানা নীতিমালা বিশেষ কিছু ধারা সংযোজনের প্রয়োজন রয়েছে।
ঢাকা চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এসএম নজরুল ইসলাম বলেন, বয়ষ্ক প্রাণীদের চিড়িয়াখানার বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়েছে। যা পরিচর্যা ও খাবার সরবরাহে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। এ কারণে এসব প্রাণীদের নিরিবিলি পরিবেশে এক জায়গায় রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে করে এসব প্রাণীদের দর্শনার্থীরা বিরক্ত করতে না পারে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে চিড়িয়াখানা এখন পর্যন্ত চিড়িয়াখানা পরিচালনার জন্য কোনো আইন করা হয়নি। যে কারণে নানা প্রতিবন্ধকতা নিয়েও কাজ করতে হচ্ছে। আশা করি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে চিড়িয়াখানা পরিচালনার জন্য আইনটি পাস হবে। এ আইনের মধ্যেই চিড়িয়াখানার বয়ষ্ক প্রাণীদের জীবনাবসানের বিষয়ে সুস্পষ্ট নিয়মনীতি।