চুরি যাওয়া ৮৭ হাজার ব্রিটিশ বুলেট আইএস -এর হাতে!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ চুরির ঘটনা ঘটেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এই গোলাবারুদের মধ্যে থাকা বিপুলসংখ্যক গুলি ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হাতে পড়েছে। রোববার জর্ডানের মরুভূমি থেকে গোলাবারুদ চুরি যাওয়ার বিষয়টি সেনাবাহিনীর একটি তদন্তে ধরা পড়ে। বাংলাট্রিবিউন
জানা গেছে, জর্ডানের মরুভূমিতে প্রশিক্ষণ চলাকালীন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ৫.৫৬ ক্যালিবার বুলেটের প্রায় ৮৭ হাজারের একটি চালান ‘হাতছাড়া’ হয়। তিনটি পদাতিক সৈন্যদলকে সজ্জিত করার জন্য এই বুলেট যথেষ্ট।
সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে আইএস এর নির্দেশেই এই চুরি সংঘটিত হয়েছে। সুড়ঙ্গ খুঁড়ে গোলাবারুদ রাখার স্থানে প্রবেশ করে একটি ট্রাকের সাহায্যে গুলিভর্তি কন্টেইনারগুলো বের করে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিট্রিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল জানায়, চলতি বছরের মার্চে ব্রিটেনের ১ হাজার ৬০০ সেনা যখন আমেরিকা ও জর্ডানের সেনাদের সঙ্গে মিলে মরুভূমিতে একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছিল তখন এই চুরির ঘটনা ঘটে। যেই চত্বর থেকে এই চুরির ঘটনা ঘটে সেখানে নিয়মিত ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর যানবাহন চলাচল করতো। ধারণা করা হচ্ছে, চোরেরা বেশ কয়েকদিন নজরদারি শেষে এই চুরির ঘটনা ঘটায়।
গুলিভর্তি কন্টেইনার চুরির ঘটনা নজরে আসার পর জোটের সৈন্যরা তা উদ্ধারের চেষ্টা চালান, কিন্তু তাতেও তারা ব্যর্থ হন। এ ঘটনাকে কয়েক দশকের মধ্যে ব্রিটিশ সামরিক সরঞ্জামের বৃহত্তম চুরি বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়,আইএস-এর অস্ত্রগুলো এসব গুলি ব্যবহারের উপযোগী। এই জঙ্গি সংগঠনের হাতে ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি প্রায় ১০ হাজার রাইফেল রয়েছে, যাতে একই আকারের ন্যাটোর গোলাবারুদ ব্যবহার করা যায়। এসব অস্ত্র ইরাকি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে আইএস দখল করেছে।
ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টির সংসদ সদস্য ও প্রতিরক্ষা কমিটির অন্যতম সদস্য রিচার্ড বেনন বলেন, এটা খুবই মারাত্মক ঘটনা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে যে কী ঘটনা ঘটেছে। আশা করি এর মধ্যদিয়ে সেনাবাহিনী আরও সতর্ক হবে, যাতে আমাদের গোলাবারুদ ভুল হাতে না পড়ে।
সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞ মাইকেল বুরলিগ এ চুরির ঘটনাকে ‘বিস্ময়কর’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এটা খুবই বিপদজনক পরিস্থিতি। কারণ এইসব গোলাবারুদ অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে আইএসসহ বিদ্রোহী বা চরমপন্থী গ্রুপের হাতে পড়াই স্বাভাবিক।
ব্রিটিশ সেনা পুলিশের একটি তদন্তে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে যে, এই চুরির ঘটনায় যুক্তরাজ্যের সৈন্যদের কেউ জড়িত রয়েছে। বর্তমানে ঘটনার তদন্তভার জর্ডানের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু জানানো হয়নি বলেও মেইলের সংবাদে উল্লেখ করা হয়।
ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, এটা খুবই বড় ক্ষতি। কিন্তু সেনাবাহিনীর গোলাবারুদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও চুরি প্রতিরোধের বিশেষ উপায় জানা রয়েছে। তবুও আক্ষরিক অর্থেই এই চুরির ঘটনায় অসামরিক পুলিশ বাহিনী দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলেও আক্ষেপ করেন তিনি। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ