রংপুরে সালিশিÑবৈঠকে কৃষককে পিটিয়ে হত্যা
মোস্তাফিজার রহমান বাবলু, রংপুর: রংপুরের গঙ্গাচড়ায় সালিশ-বৈঠকে লাল মিয়া (৪৮) নামে এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের উত্তর কোলকোন্দ গ্রামে বুধবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কোলকোন্দ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য উত্তর কোলকোন্দ গ্রামের হোদা মিয়ার দ্বিতীয় ছেলে ও গঙ্গাচড়া ডিগ্রি কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র মিল্টনের (২২) বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনে প্রতিবেশী আলেকিশামত গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম বুলু (৩৫)। বুলুর অভিযোগ, তার স্ত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করেছে মিল্টন। অভিযোগের পরিপ্র্রেক্ষতে কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজুর নেতৃত্বে বুধবার রাত ৯টার দিকে উত্তর কোলকোন্দ গ্রামের মৃত শহির আলীর ছেলে শাফিকুল ইসলামের বাড়ির উঠানে সালিস বসে। সালিসের রায়ে চেয়ারম্যান রাজু অভিযুক্ত মিল্টনকে শাসন করার জন্য তার বাবা হোদা মিয়াকে নির্দেশ দেন। হোদা মিয়া ছেলেকে ২-৪টা চর-থাপ্পড় দিলে বিচারকদের তা মনপুত না হওয়ায় চেয়ারম্যানের নির্দেশে স্থানীয় একরামুলের ছেলে রিপনসহ ৪/৫জন ইউপি সদস্য হোদা মিয়া, তার ছেলে নাজমুল (২৪) ও মিল্টনকে বেদম মারপিট করতে থাকে। এসময় ভাই-ভাতিজাকে রক্ষা করতে হোদা মিয়ার ছোট ভাই লাল মিয়া (৪৮) এগিয়ে গেলে তাকেও বেধড়ক মারতে থাকেন চেয়ারম্যানের সহযোগীরা। এই সুযোগে আত্মরক্ষার্থে হোদা মিয়া ও তার ছেলেরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। বেদম প্রহারের একপর্যায়ে লাল মিয়া ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎক মৃত ঘোষণা করেন। একপর্যায়ে রাতেই লাল মিয়ার মরদেহ নিয়ে এসে ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে দাফনের চেষ্টা চালান ওই চেয়ারম্যান ও তার সাহযোগীরা। তবে নিহতের স্ত্রী শিরিনা বেগম (৪২) ও ছেলেরা এর বিরোধিতা করলে তা সম্ভব হয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠিয়ে দেন। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান