বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ মওকুফ করে না!
জাফর আহমদ: বাংলাদেশ ব্যাংক জানে না কাকে ঋণ মওকুফ করা হয়েছে। ঋণ অবলোপন (রাইট আপ) করা হলেও তা মওকুফ করা হয় না। তা ভিন্ন রেজিস্টারে হিসাব সংরক্ষণ করা হয়। সেখানে থেকে ফেরতের কার্যক্রম অব্যাহত থাকে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবিতে ওই ঋণ গ্রহীতার নামও সংরক্ষিত হয় যাতে নতুন করে ওই গ্রাহক অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ না নিতে পারে। ‘ঋণ মওকুফের তালিকা আদালতে দাখিলের নির্দেশ’ সম্পর্কিত উচ্চ আদালতের আদেশের পর বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক উচ্চ আদালতের আদেশের কপির অপেক্ষায় আছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ঋণ মওকুফ করে না বা মওকুফ করার নির্দেশনা দেয় না। তবে সুদ মওকুফের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি নির্দেশনা আছে এবং সরকারেরও যেহেতু ব্যাংক আছে এ ব্যাপারে সরকারের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগেরও একটি প্রজ্ঞাপন আছে। তার আলোকে সুদ মওকুফ করা হয়ে থাকে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা হাতে পেলে বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য একটি সূত্র জানায়, সুদ মওকুফের বিধান থাকলেও সার্বিকভাবে ঋণ মওকুফের কোনো বিধান নেই। তবে ঋণ নেওয়ার পর গ্রাহক অব্যাহতভাবে কিস্তি পরিশোধ না করার কারণে সে ঋণ প্রথমে খেলাপি ও পরে রাইট বা অবলোপন করা করা হয়। এ অবলোপনকৃত ঋণ মওকুফ নয়। শুধুমাত্র নিয়মিত ঋণের নথির বাইরে ভিন্ন নথিতে তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। এ ঋণ আদায়ের জন্য কার্যক্রমও অব্যাহত থাকে। এ ঋণ আদায় হলে তা ব্যাংকের মূল নথিততে তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিপারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত মঙ্গলবার একটি আদেশ দেন। আদেশে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণ মওকুফ করেছে তাদের তালিকা দিতে বলেছে। পাশাপাশি ২০৯১ সালের ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২৮ (১) ধারা ‘ঋণ বা উহার অংশ মওকুফ’ এবং ক্ষমতা সংক্রান্ত ৪৯(চ) উপধারার ‘ঋণ মওকুফ’ অংশ সংবিধানের ১৯, ২৬, ২৭ এবং ৩১ অনুচ্ছেদের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে কেন সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছে। সম্পাদনা: এনামুল হক