মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান আওয়ামী লীগের
আল হেলাল শুভ: বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের দেওয়া প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটি দাবি করেছে, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি অনেক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ভালো। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে নিজের রাষ্ট্রের মানবাধিকারের ওপর নজর দেওয়ার আহ্বান দলটির। গতকাল রোববার ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এ কথা জানান।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রতিবেদন আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার আগে আমরা আমাদের ঘনিষ্ঠ রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলব, আগে নিজেদের রাষ্ট্রের মানবাধিকারের ওপর সবিনয়ে নজর দেন।
তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি অনেক ক্ষেত্রে ভালো। তাদের দেশে প্রতিবছর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১১শ মানুষের মৃত্যু হয়। যাদের বেশির ভাগ সংখ্যালঘু। এ বছরও ৬শ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ‘কালো মানুষের জীবনও মূল্যবান’ এ শিরোনামে আন্দোলন গড়ে উঠেছে। গুয়েনতামালো বেসহ বিভিন্ন কারাগারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় বিভিন্ন দেশের পত্র-পত্রিকায় উঠে এসেছে।
জঙ্গি দমনেও বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ভালো দাবি করে আওয়ামী লীগের মুখপাত্র বলেন, তাদের দেশে পুলিশের গুলিতে অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। আর বাংলাদেশে পুলিশের গুলিতে তখনই কেউ মারা যায়, যখন সন্ত্রাসীরা পুলিশের ওপর হামলা করতে পাল্টা গুলি করে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখছেনÑঅর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের এমন বক্তব্যের বিষয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, দেখুন, অর্থমন্ত্রী অনেক সময় অনেক কথা বলেন। এটা তার ব্যক্তিগত মত হতে পারে। উনি অনেক সময় এমন বক্তব্য দেন এবং প্রত্যাহার করেন। হয়তো কিছুদিন পর তার এমন বক্তব্য নিয়ে দ্বিমত পোষণ করবেন।
দায়িত্বশীল জায়গা সরকার ও দলীয় মতের বাইরে দেওয়া অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক সৌন্দর্য। অর্থাৎ আওয়ামী লীগে যে কেউ তার মত প্রকাশ করতে পারে। তার উদাহরণ হচ্ছে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য। তিনি অকপটে তার ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করেছেন। এ থেকে প্রমাণিত হয় দলে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র আছে।
গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর এদেশে বিশ্ব বিনিয়োগের সহায়তায় বিস্তৃÍতি লাভ করে ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ঋণের জালে আবদ্ধ আষ্টে-পৃষ্ঠে বেঁধে ফেলা হয়। এটা আসলে সম্মানের সঙ্গে ভিক্ষাদান। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার ক্ষুদ্র ঋণের পরিবর্তের ক্ষুদ্র অনুদান প্রকল্প করেছে। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা: কিরণ সেখ