সাধারণ মানুষকে নির্ভেজাল ওষুধ সরবরাহে চালু হচ্ছে ১ লাখ ২৮ হাজার মডেল ফার্মেসি
তরিকুল ইসলাম সুমন: নিবন্ধনহীন ওষুধ বা ভেজাল ওষুধ ক্রয়-বিক্রয় ও বিতরণ বন্ধ করার পাশপাশি সাধারণ মানুষকে নির্ভেজাল ওষুধ সরবরাহে ঢাকাসহ সব জেলা শহরে সরকারি উদ্যোগে চালু হচ্ছে ‘মডেল ফার্মেসি’। ইতোমধ্যে এ প্রক্রিয়া শুরু করেছে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ‘পাইলট’ প্রকল্পের আওতায় বেশ কয়েকটি ফার্মেসিও চালু করা হয়েছে। এটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য একটি নীতিমালাও তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে রাজধানীতে ৪০-৫০টি, প্রতিটি বিভাগে ১৫০ থেকে ২০০টি এবং প্রতিটি জেলায় ২ হাজার হিসেবে ১ লাখ ২৮ হাজার মডেল ফার্মেসি স্থাপন করা হবে।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর সূত্র জানায়, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। মডেল ফার্মেসিকে কমপক্ষে ৩০০ বর্গফুটবিশিষ্ট ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। সার্বক্ষণিক রেজিস্টার্ড গ্রাজ্যুয়েট ফার্মাসিস্ট নিয়োগসহ সুনির্দিষ্ট কিছু নীতিমালা মেনে মডেল ফার্মেসি কাজ করবে। তিনটি ক্যাটাগরিতে মডেল ফার্মেসিকে ভাগ করা হয়েছে। ‘এ’ ক্যাটাগরিতে সফিসটিকেটেড ওষুধ, ‘বি’ ও ‘সি’ ক্যাটাগরিতে সাধারণ ওষুধ থাকবে। এক্ষেত্রে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ ক্যাটাগরিতে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রিধারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়োগ দেওয়া হবে। এজন্য তাদের যথাযথ সম্মানির ব্যবস্থাও করা হবে। আর এটা একইসঙ্গে ওষুধের দোকানগুলোকে ফার্মেসি ও মেডিসিন শপ হিসেবে দুই ভাগে চিহ্নিত করে সরকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট ড্রাগ লাইসেন্সপ্রাপ্ত ফার্মেসির সংখ্যা ১ লাখ ২৩ হাজার ৫৪২টি। আর লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসির সংখ্যা ৯ হাজার ৮০৫টি। এদের মধ্যে ‘এ’ গ্রেড ফার্মেসিগুলোকে স্নাতক সম্পন্ন করা ফার্মাসিস্ট এবং ‘বি’ গ্রেড ফার্মেসিগুলোকে ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যাতে করে ওষুধ ক্রয় করতে গিয়েও রোগীরা ওষুধ সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পারেন।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ডা. মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, এসব ফার্মেসিতে ফার্মাসিস্ট নিয়োগসহ ওষুধ বিক্রির সব ধরনের মান বজায় রাখা হবে। একইসঙ্গে ফার্মাসিস্টরা যে ওষুধ বিক্রি করবে সেই ওষুধ সম্পর্কে ক্রেতারা সংক্ষিপ্ত ধারণাও পাবেন। ভেজাল ও নকল ওষুধ বিক্রি ঠেকাতে ‘মডেল ফার্মেসি’ কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, ওষুধ বিক্রির ক্ষেত্রে নীতিমালা মেনে ব্যবসা করতে হবে। একইসঙ্গে শিগগিরই প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে একটি করে মডেল ফার্মেসি চালু করা হবে। এর মাধ্যমে মান যথাযথ রাখার পাশাপাশি ওষুধের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করার জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখবে। ওষুধ নীতি অনুযায়ী প্রত্যেক মডেল ফার্মেসিতে ৩৯টি প্রয়োজনীয় ওষুধ ছাড়া সব ধরনের ওষুধ বিনা প্রেসক্রিপশনে বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হবে। সম্পাদনা: এনামুল হক