তথ্য সংগ্রহে জাপান, ইতালি ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ৫ দেশের গোয়েন্দা
বিপ্লব বিশ্বাস : গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলায় দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। এর পাশাপাশি এফবিআইও মাঠে নেমেছে। ঢাকায় জাপান ও ইতালি দূতাবাসের বিভিন্ন পদে কর্মরত কর্মকর্তারাও হামলার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে কাজ করছেন। এছাড়া ভারত সরকারের যুগ্ম সচিবের (নিরাপত্তা) নেতৃত্বে একটি দল ঢাকায় অবস্থান করছেন। তারা গোপনে কাজ করছেন বলে জানা গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান জোনের এক কর্মকর্তা জানান, ঘটনার পরদিনই জাপান ও ইতালি থেকে বিপুলসংখ্যক বিদেশি নাগরিক এসেছেন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নাগরিকরা দূতাবাসে কাজের সুবাদে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তাদের অনেকেই গুলশান হামলার তথ্য সংগ্রহ করে নিজেদের মতো করে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন। গুলশানের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত সিটি ইউনিটের এক এডিসি বলেন, বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কেউ পরিচয় গোপন করে বা নিহতদের আত্মীয়স্বজন পরিচয় দিয়ে এসে থাকতে পারে। তবে দাফতরিকভাবে কেউ সিটি ইউনিটের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তবে জাপান এ ঘটনায় বাংলাদেশের তদন্ত অগ্রগতির বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। গত রোববার ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ অসন্তোষের কথা জানান। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, গুলশান হামলায় নির্মম হত্যাকা-ের শিকার জাপানিদের বিষয়ে আলামত সংগ্রহের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলে জাপান। তাদের দাবি আলামত সংগ্রহের পদ্ধতি ছিল ত্রুটিযুক্ত। তদন্তের অগ্রগতি নিয়েও তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, মূলত জাপান নিজেদের মতো করে ঘটনার তদন্ত এবং অনুসন্ধান করছে। তাদের পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশি তদন্ত সংস্থার কাজে অসঙ্গতি ধরা পড়ায় তারা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
তবে অপর একটি সূত্র জানায়, জাপান, ইতালি, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ৫ দেশ গুলশান হামলার ঘটনায় গোপনে তথ্য সংগ্রহ করছে। তদন্ত সংস্থার সদস্যরা ইতোমধ্যে এ ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছেন। পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (গোপনীয়) মো. মনিরউজ্জামান জানান, ‘বিদেশি কোনো আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গুলশান হামলার বিষয়ে তদন্তের অনুমতি চায়নি। তবে বিদেশি তদন্ত সংস্থার মধ্যে যাদের সঙ্গে আমাদের ওয়ার্কিং রিলেশন আছে যেমন- এফবিআই, এনআইএ (ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি), এএফপি (অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশ) তারা আমাদের কাছে ঘটনা সম্পর্কে তথ্য জানতে চেয়েছেন। আমরাও তাদের কাছ থেকে কিছু তথ্য জানার চেষ্টা করছি। তারা আমাদের তদন্ত সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা যখন প্রয়োজন মনে করব, তাদের সহযোগিতা নেব। আমরা সেভাবেই সরকারকেও বলেছি। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ও সেভাবেই বলেছেন।’
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, ‘গুলশানে জঙ্গি হামলার ঘটনা তদন্তে আমরাই যথেষ্ট। আমাদের গোয়েন্দারা এ বিষয়ে তদন্ত করতে সক্ষম। তবে তদন্তের প্রয়োজনে বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে কারিগরি সহায়তা নেওয়া যেতে পারে। পুলিশ কি ধরনের সহযোগিতা নেবে এ বিষয়টি তিনি পরিষ্কার না করে বলেন, তদন্তের পর্যায়ে যখন যে সহযোগিতা দরকার সেটি চাওয়া হবে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি