নেতা হয়ে বসে থাকলে চলবে না কাজ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
ডেস্ক রিপোর্ট: নেতা হয়ে শুধু বসে থাকলে চলবে না। তাঁতীদের কল্যাণে কাজ করতে হবে। তাদের সমস্যাগুলো কী তা দেখতে হবে। তাদের দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। তাদের মধ্যে যে মেধা রয়ে গেছে এই ঐতিহ্যটাকে যেন তারা লেখাপড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধরে রাখার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের এই সহযোগী সংগঠনের জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকার প্রধান বলেন, তাঁত খাত দেশের তৃতীয় বৃহৎ শিল্প হলেও এ খাত অতীতে যথাযথ গুরুত্ব পায়নি। তাঁতী লীগ গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন হলেও এ সংগঠন সবসময় অবহেলার শিকার। আমাদের বিভিন্ন সংগঠন রয়েছে সহযোগী সংগঠন ও তার বাইরেও। আমরা চাই প্রতিটি সংগঠন নীতি ও আদর্শ মেনে চলবে। যে যে বিষয়ে সংগঠন করছে, সেখানে সেই সম্প্রদায়ের মানুষের যাতে কল্যাণ হয়, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন। তিনি বলেন, তাঁতের তৈরি বস্ত্রের জন্য একসময় এ অঞ্চলের খ্যাতি থাকলেও সময়ের পরিক্রমায় তা হারিয়ে যাচ্ছে। এটা তো একটা শিল্প, এটা একটা কলা, এটা একটা আর্ট, সেখান থেকে কেউ রিকশাচালক হয়ে যায়, কেউ মাটি কাটতে শুরু করে।
তিনি বলেন, ভারতে খদ্দেরের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। উন্নতমানের খদ্দেরের কাপড় সেখানে তৈরি হয়। কিন্তু বাংলাদেশ এই জায়গায় খুব বেশি এগোতে পারেনি। আমরা চাই, আমাদের এই ঐহিত্যগুলো আবার ফিরে আসুক। আমরা যেন উন্নতমানের কাপড় তৈরি করতে পারি।
দেশিয় পোশাকের প্রতি নিজের দুর্বলতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমি কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে ফ্রেঞ্চ শিফন কখনো পরিনি। আমি বাংলাদেশের তৈরি আমাদের তাঁতীদের তৈরি কাপড়টাই সবসময় ব্যবহার করি। সেটা সুতির কাপড় হোক, সিল্কের হোক, এমনকি আমার খদ্দেরের শাড়িও আছে সেটাও আমি পরি।
তাঁতীদের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের কথাও প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই প্রথম তাঁতীদের ঋণ দেওয়া শুরু হয়। চলতি বছরও ৪২৬টি তাঁতের বিপরীতে ১৪২ জন তাঁতীকে ৪৯ লাখ ২৬ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। মসলিন সুতাটা কোনো কোনো এলাকায় হতো সেটা আবার করা যায় কি না, আমরা সে সার্ভে করছি। আমরা গবেষণাও করছি।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ তাঁতী লীগের আহ্বায়ক এনায়েতুর রহমান চৌধুরী। স্বাগত বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ তাঁতী লীগের যুগ্ম আহবায়ক সাধনা দাস গুপ্তা। প্রথম যুগ্ম আহবায়ক খগেন চন্দ্র দেবনাথ সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন। শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. শওকত আলী।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের সকল শহীদ, কারাগারে নিহত জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ, গণতন্ত্র উদ্ধারে আত্মাহুতিদানকারী তাঁতী লীগের প্রয়াত নেতৃবৃন্দ স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। তিনি সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। সম্পাদনা: এনামুল হক