প্রতিরক্ষা চুক্তি থেকে জনগণের দৃষ্টি ফেরাতেই জঙ্গি তৎপরতা : রিজভী
কিরণ সেখ: দেশব্যাপী রক্তাক্ত জঙ্গি তৎপরতা প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়ে মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার কৌশল হিসেবে জনগণ দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের প্রাক্কালে প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রতিবাদে সারাদেশ যখন ফুঁসে উঠেছে, ঠিক তখনই আবারও দেশব্যাপী রক্তাক্ত জঙ্গি তৎপরতা চালিয়ে প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা চুক্তি থেকে মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে নেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। জঙ্গিবাদ নিয়ে দেশের মানুষকে অন্ধকারের মধ্যে ফেলে রাখা হচ্ছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বারবার জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানালেও আওয়ামী লীগ বারবার তা প্রত্যাখ্যান করেছে। সুতরাং জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করে সরকারই ফায়দা নিচ্ছে- অভিযোগ করেন রিজভী। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিকে বানচাল করতেই জঙ্গিবাদের তৎপরতা সৃষ্টি করা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ দেশ থেকে দূর হোক তা সরকার চায় না। যার প্রমাণ মিলছে, জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের ভূমিকায়। হানিফ মৃধা-সোহেলদের মা ও স্ত্রীদের কান্না জনগণের কাছে জঙ্গিবাদ নিয়ে সরকারের রহস্যজনক ভূমিকা আরও স্পষ্ট করেছে বলেন তিনি। বিএনপির মুখপাত্র আরও অভিযোগ করেন, বর্তমানে গুম ও অপহরণের অধিকাংশ ঘটনা পুলিশ থানায় নথিভুক্ত করতে চায় না। গুম ও অপহরণের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ থাকায় ওইসব ঘটনায় থানায় মামলা করা রীতিমতো দুঃসাধ্য। এমনকি তা সাধারণ ডায়েরিভুক্ত করতেও চায় না। আর করলেও অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। আমরা কেবিনেটে বসি, আমরাও তো জানি না কি চুক্তি হবে- এলজিআরডিমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের এ বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন রিজভী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এলজিআরডিমন্ত্রীকে বলতে চাই, গণমাধ্যমে এতো খবর বের হচ্ছে, আপনাদের দলের বিভিন্ন নেতারা প্রতিরক্ষা চুক্তি বিষয়ে নানা কথা বলছেন। অথচ সে বিষয়ে আপনাদের মতো কেবিনেট মন্ত্রীরা জানেন না, না কি বেমালুম চেপে যাচ্ছেন? এখানেইতো আসল রহস্য লুকিয়ে আছে। আপনারা দেশের মানুষকে অন্ধকারে রেখে গোপনে দেশবিরোধী চুক্তি করে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিতেও কুণ্ঠাবোধ করছেন না। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ভারতের কাছে এতটাই নতজানু যে, ভারতের একটি প্রদেশের মূখ্যমন্ত্রী যতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সেই স্বাধীনতাও নেই। পশ্চিম বাংলার মূখ্যমন্ত্রীর কারণে আজও তিস্তা চুক্তি হয়নি। আর ভবিষ্যতেও হবে কি না তাও অনিশ্চিত আশঙ্কা রিজভীর। সম্পাদনা: রফিক আহমেদ