সশস্ত্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী হামলা বন্ধে আন্দোলন করতে হবে : সিপিবি-বাসদ
রফিক আহমেদ : বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতারা বলেছেন, সশস্ত্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী হামলা বন্ধ করতে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। গতকাল বুধবার পুরানা পল্টনের মুক্তিভবনস্থ প্রগতি সম্মেলন কক্ষে সিপিবি-বাসদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতারা এসব কথা বলেন।
সিপিবি-বাসদের নেতারা বলেন, সশস্ত্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদের বিপদ মোকাবিলায় পরস্পর দোষারোপের রাজনীতি পরিহার করে এবং দলীয় সংকীর্ণ স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সরকার, বিরোধী দল, বাম-গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তি একযোগে কাজ করা প্রয়োজন। জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ আন্দোলনের মাধ্যমেই এই অন্ধকারের কালো শক্তিকে কার্যকরভাবে নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব। শাসকগোষ্ঠীর অগণতান্ত্রিক আচরণ, সশস্ত্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী হামলা, দুর্নীতি-লুটপাট বন্ধ করতে কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ লক্ষ্যে জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই।
সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য দেন- বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য শামছুজ্জামান সেলিম, আহসান হাবিব লাবলু, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহবুবুল আলম, রুহিন হোসেন প্রিন্স, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, বাসদ নেতা জুলফিকার আলী, খালেকুজ্জামান লিপন, আব্দুর রাজ্জাক ও শামসুন্নাহার জ্যোৎস্না প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনের নেতারা আগামী ১৫ জুলাই থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত ‘প্রতিরোধ মাস’ পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করে দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা গোটা মাস ধরে ঘরে ঘরে প্রতিরোধের দূর্গ গড়ে তোলার আহ্বান ছড়িয়ে দেবেন। এই মাসে গ্রামে-গঞ্জে, হাটে-বাজারে, পাড়া-মহল্লায়-সর্বত্র প্রতিরোধ-সমাবেশ এবং প্রতিরোধ ব্রিগেড গঠন করার কাজ পরিচালনা করা হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সেলিম বলেন, দেশের অস্তিত্বকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। দেশের উপর একাধারে সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং সাম্রাজ্যবাদ-এই দ্বিমুখী বিপদ। সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদ একে অপরের পরিপূরক। সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদ প্রতিহত করার অজুহাতে আমেরিকা বিশেষজ্ঞ সহায়তা পাঠাতে চায়। এটাই কি আসল সত্য, নাকি আমেরিকান সৈন্য পাঠানোর চক্রান্ত বাস্তবায়নের অজুহাতের জন্য বর্তমান পরিস্থিতি পরিকল্পিতভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে? বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের খেলায় আটকে ফেলার চক্রান্ত চলছে। তালেবান, আল-কায়েদা ও আইএস এ ধরনের প্রতিটি শক্তিই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের মদদেই গড়ে উঠেছে এবং লালিত-পালিত হচ্ছে। মার্কিনীদের ‘সর্প হয়ে দংশন করে, ওঝা হয়ে ঝাড়ে!’-এই কৌশলের কথা সর্বজনবিদিত। ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে আমরা পাকিস্তানের গোলামী ছিন্ন করেছি, নতুন করে আমেরিকা, ভারত বা অন্য কারো গোলামী করার জন্য নয়। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম