রাজীব হত্যা মামলায় ২ জনের ফাঁসিসহ ৮ জনের সাজাই বহাল
এস এম নূর মোহাম্মদ: গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ব্লগার রাজীব হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদ-, একজনের যাবজ্জীবন কারাদ-সহ আট আসামিকে নিম্ন আদালতের দেওয়া সাজাই বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের করা আপিলের শুনানি শেষে গতকাল রোববার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র রেদোয়ানুল আজাদ রানা ও ফয়সাল বিন নাঈম ওরফে দীপের মৃত্যুদ-, মাকসুর হাসান অনিকের যাবজ্জীবন কারাদ- বহাল রাখা হয়। সেইসঙ্গে এহসান রেজা রুম্মান, নাঈম ইরাদ ও নাফিজ ইমতিয়াজকে দশ বছর করে সশ্রম কারাদ- বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এছাড়া আনসারুল্লা বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানিকে দেওয়া পাঁচ বছর সশ্রম কারাদ- ও সাদমান ইয়াছির মাহমুদকে দেওয়া ৩ বছর সশ্রম কারাদ-ও বহাল রাখেন উচ্চ আদালত।
আদালত বলেন, আসামিদের অপরাধ এতই ভয়ঙ্কর ও নৃশংস যে তাদের সাজা কমানোর কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া আসামিদের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, অপরাপর সাক্ষীদের সাক্ষ্য ও পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। নিম্ন আদালত সকল বিষয় পর্যালোচনা করে সাজা দিয়েছে। তাই ওই রায় পরিবর্তন করার কোনো কারণ খোঁজে পাইনি। এ কারণে বিচারিক আদালতের রায়ই বহাল রাখা হলো।
২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকে রাজধানীর পল্লবীতে তার বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় রাজীবের বাবা ডা. নাজিম উদ্দিনের করা মামলায় ২০১৪ সালের ২৮ জানুয়ারি আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এর পরের বছর ২০১৫ সালের ১৮ মার্চ বিচারিক আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু করে। সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে একইবছরের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহম্মেদ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে দুই আসামিকে মৃত্যুদ- এবং অন্যদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ-াদেশ দেন তিনি। পলাতক আসামি রানা বাদে অন্যরা ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইাকার্টে আপিল করেন। পাশাপাশি ওই মামলার ডেথ রেফারেন্স আসে হাইকোর্টে। সেইসঙ্গে রাজীবের বাবা আসামিদের সাজা বাড়ানোর জন্য ক্রিমিনাল রিভিশন দায়ের করেন। এরপর হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয় গত বছরের ৭ নভেম্বর। গত ৯ জানুয়ারি শুনানি শেষে হাইকোর্ট মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম ও বিলকিস ফাতেমা। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট রেজাক খান, মোশাররফ হোসেন কাজল ও কামাল হোসেন মিয়া। সম্পাদনা: শিমুল মাহমুদ