বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকের প্রতি প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধীরা কাজ করতে পারে, ওদের চাকরি দিন
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: প্রতিবন্ধীদের অবহেলা করার আর সুযোগ নেই। সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের প্রতিবন্ধীদের চাকরির সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীরা কাজ করতে পারে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি খাতে প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা করেছিলেন। এই সরকার তা আবার চালু করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা যদি প্রতিবন্ধীদের চাকরির ব্যবস্থা করে দেন, তাহলে অনেকেই স্বাবলম্বী হবে।
গতকাল রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে-স্বকীয়তা ও আত্মপ্রত্যয়ের পথে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনস্টাইন, ডারউইন ও নিউটন তারা অটিজমে ভুগতেন। তারা মেধা বিকাশের সুযোগ পেয়েছিলেন। আজকে বিশ্বে তারা কত বড় উপকার করে দিয়েছেন। তাই প্রতিবন্ধীবান্ধব প্রযুক্তি তৈরি করতে হবে। যে সফটওয়্যারগুলো তৈরি করা হচ্ছে প্রতিবন্ধীরাও যেন সে সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারে, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে। কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে, সেই প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী এসময় প্রতিবন্ধীদের নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশে অটিজম সম্পর্কে মানুষের তেমন কোনো ধারণা ছিল না। আমার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ-এর নিরলস প্রচেষ্টায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অটিজমের গুরুত্ব ও সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সে এখন বাংলাদেশে অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন। তার উদ্যোগে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ‘অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু ও তাদের পরিবারের জন্য স্বাস্থ্যসেবা এবং আর্থ-সামাজিক সহায়তা বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রস্তাব গৃহীত হয়। তিনি বলেন, আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর সায়মা ওয়াজেদ-এর পরামর্শে অটিজম বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি ও তাদের কল্যাণে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে বাস্তবায়ন শুরু করি। সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. মো. মোজাম্মেল হোসেন।
প্রধানমন্ত্রী এসময় বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুদের সাধারণ বিদ্যালয়ে ভর্তি না করার মন-মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। প্রতিবন্ধীতার কারণে কোনো শিশুকে শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে রাখা যাবে না।
তিনি বলেন, অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সকল শিশু সাধারণ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করবে। ফলে এ ধরনের শিশুরা নিজ পরিবার থেকে বাড়ির নিকটবর্তী বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবে। ২০০৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ২ এপ্রিল দিবসটি বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়। ২০০৮ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হচ্ছে। সম্পাদনা: রফিক আহমেদ