প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে আশঙ্কা অমূলক : শ্রীংলা সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চুক্তি হবে
বিশ্বজিৎ দত্ত: পারস্পরিক সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রতিরক্ষাসহ সকল চুক্তি সম্পাদন হবে। অনেকে প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। যা একেবারেই অমূলক ও ভিত্তিহীন। ভারত এমন কিছুই করবে না যাতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বের মর্যাদা ক্ষুণœ হয়। চুক্তিতে গোপন কোনোকিছুই থাকবে না। তার প্রয়োজনও নেই। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ভারত অন্যদেশের সঙ্গে যেসব চুক্তি করে তা প্রকাশ্যেই করে। চুক্তি সম্পাদনের সঙ্গে সঙ্গেই তা অনলাইনে প্রকাশ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগে গতকাল সম্পাদকদের সঙ্গে এক বৈঠকে একথা বলেন বাংলাদেশস্থ ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা।
তিনি জানান. বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা চুক্তিতে এমন কিছু থাকছে না যা আগে ছিল না। চুক্তি ছাড়াই বিভিন্ন ধাপে ধাপে প্রতিরক্ষায় ভারতের সহযোগিতা ছিল। এই সহযোগিতাগুলোকেই একটি আম্ব্রেলা চুক্তির আওতায় আনতে যাচ্ছে দুটি দেশ। এই ধরনের চুক্তি অনেক দেশের সঙ্গে ভারত আগেও করেছে। বাংলাদেশও অনেক দেশের সঙ্গে করেছে। এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রেওয়াজ। পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণেই এক দেশ অন্যদেশের সঙ্গে তা করে থাকে। তিনি জানান, প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে অমূলক আশংকা থেকে যে আলোচনা হচ্ছে তাতে বাংলাদেশের সঙ্গে করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি আলোচনা থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সফরে দুই দেশের মধ্যে বহুমাত্রিক সম্পর্কের দ্বার উন্মোচন করবে। এটি হবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একধাপ বড় অগ্রযাত্রা। বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারত কতভাবে সহযোগিতা করতে পারে তার অনেকগুলো বিষয় উন্মোচন হবে এই সফরে। অনেকগুলো চুক্তিতে থাকবে সহযোগিতার সূচনা, অনেকগুলো হবে সম্প্রসারণের।
ভারত বাংলাদেশেকে ঋণ দিবে সর্বনিম্ন সুদে। শতকরা ১ শতাংশেরও নিচে হবে এই ঋণের সুদ। বিনিয়োগের অনেক ক্ষেত্রে ভারতীয় ঋণ বড় হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারতীয় বেসরকারি বিনিয়োগ সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ভারতীয় বেসরকারি খাত বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত। এখানে মাল্টিবিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে তারা। এটি হবে বাংলাদেশের জন্য বিরাট সুযোগ। এই সফরের পর বিভিন্ন ভারতীয় কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগের শুভ সূচনা করবে।
পারমানবিক ও মহাকাশ বিষয়ক চুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতে একসঙ্গে কাজ করবে। আবার মহাকাশে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত যেহেতু এগিয়ে রয়েছে তাতেও বাংলাদেশকে সঙ্গী করতে চায় ভারত। আমরা মাহাকাশের বিভিন্ন গবেষণা ও যৌথ স্পেসশিপ পরিচালনায়ও কাজ করব। আমরা বাংলাদেশে মেক ইন ইন্ডিয়া তৈরি করতে চাই না। আমরা বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে চাই। আমরা চাই বাংলাদেশ মেক উইথ ইন্ডিয়া। তিনি বলেন, ভারতে এখন যে সরকার রয়েছে এই সরকার অনেক মজবুত। সম্প্রতি উত্তর প্রদেশসহ কয়েকটি রাজ্যে বিজেপি জয়ী হওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে আগামী দিনেও ভারতে এই বিজেপি সরকারই থাকবে। সুতরাং এই সরকারের সঙ্গে যেকোনো চুক্তি দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা দেবে।
পাকিস্তান প্রসঙ্গে বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তার হুমকি রয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক তা নয়। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বন্ধুত্বের। আমরা এগোতে চাই বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়েই। পরস্পরের মধ্যে বিশ্বাস, মর্যাদা ও বন্ধুত্ব নিয়ে। সম্পাদনা: গিয়াস উদ্দিন আহমেদ