মমতার প্রস্তাব আমলে নেয়নি বাংলাদেশ : তথ্যমন্ত্রী
ফারুক আলম: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেয়া তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তির বিকল্প প্রস্তাব বাংলাদেশ আমলে নেয়নি বলে জানিয়েছেন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। গতকাল সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিস্তায় পানি নেই দাবি করে, পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি ছোট নদীর পানি বণ্টনের যে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে হাসানুল হক ইনু বলেন, তিস্তা তিস্তাই, তিস্তার পানি বণ্টন করার জন্য আরেকটি নদীর কোথায় কি হবে সেটা আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না।
আ.লীগ সরকারের আমলেই তিস্তার পানি বণ্টন হতে পারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এ কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিস্তার পানির দাবি সহ বাংলাদেশ-ভারতের মধ্য প্রবাহিত অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানির প্রবাহ নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জোরালোভাবে তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী। সম্মেলনে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের ২২টির তথ্য তুলে ধরা হয়। অন্যগুলোর বিষয়েও জানানো হবে, লুকোছাপার কিছু নাই বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।
অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক করার আগে সংসদ বা জনগণের সঙ্গে আলোচনা করা যায় কিনা সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে হাসানুল হক ইনু বলেন, চুক্তির আগে সরকারকে সংসদে বা জনগণের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে সেই প্র্যাকটিস নাই। খালেদা জিয়ার সরকারও কোনো দিন করেনি, পৃথিবীর কোনো সরকার করে না।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তিগুলো বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে কোনো হুমকি ও বিপদে ফেলবে না। বরং এর মাধ্যমে আমাদের সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং উন্নততর প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। শেখ হাসিনার ভারত সফরের মধ্যদিয়ে সাইবার নিরাপত্তা, পারমাণবিক বিদ্যুৎ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, স্যাটেলাইট ও মহাকাশ গবেষণার মতো অতিগুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র ও ঋণ সহায়তার বিষয়ে চুক্তির মাধ্যমে দুদেশের সহযোগিতার ক্ষেত্রে আরও একধাপ অগ্রগতির ও উন্নয়নের নতুন দিগন্ত সূচিত হলো।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে খালেদা জিয়া ঢালাও বক্তব্য দিয়েছেন মন্তব্য করে ইনু বলেন, তার বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে তিনি চুক্তির বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবগত নন এমনকি চুক্তির শিরোনামগুলোও পড়ে দেখেননি। কোন চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ বিঘিœত হল বা কোন চুক্তিতে দেশ বিক্রি হল তাও স্পষ্ট করতে পারেননি।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে ৮৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক ছিল বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী। ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা খাতে তিনটি চুক্তির প্রসঙ্গ তুলে ইনু বলেন, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালিসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ে ১০টি চুক্তি রয়েছে। বাংলাদেশ ৭০ থেকে ৮০ ভাগ সামরিক সরঞ্জাম চীন থেকে কিনে। ভারত থেকে সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় আমাদের ক্রয়কে আরও বহুমুখী ও প্রতিযোগিতামূলক করা এবং নির্দিষ্ট নির্ভশীলতা থেকে বেরিয়ে আসার একটি পদক্ষেপ।
প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার এবং সিনিয়র উপ-প্রধান তথ্য অফিসার (প্রেস) আকতার হোসেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা: এনামুল হক