যশোর থেকে হারিয়ে যাচ্ছে গরুর গাড়ি
মালেকুজ্জামান কাকা, যশোর : আবহমান গ্রাম বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য একমাত্র পরিবহন গরুর গাড়ি সময়ের বিবর্তনে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। গরুর গাড়ি চালক গাড়োয়ানের মুখে থাকতো গান। সারাদিন দেখা যেত একই দৃশ্য। এক সময় গাড়িয়ালের সাথে সাথে গ্রাম বাংলার সহজ সরল মানুষ মুখে মুখে গেয়ে ফিরতো সারাক্ষণ। মানুষের মালা-মাল পরিবহন ও দুরদুরান্তে যাতায়াতের জন্য গরুর গাড়িই ছিল একমাত্র মাধ্যম। কালের বিবর্তনে এখন আর গরুর গাড়ি চোখে পড়ে না। কালের পরিবর্তনে সেই পরিবেশ বান্ধব পরিবহন আজ বিলুপ্তির দার প্রান্তে চলে এসেছে। বৃহৎ আকৃতির গোলাকার দুটি চাকা বাবলা কাঠের তৈরি করা হয়।
মালামাল বহনের জন্য গাড়ির উপরে ঝোড়া বা বেড়া লাগানো হয়। আর মানুষ বা নতুন বর কনে বহনের জন্য ব্যবহার করা হয় বাহারি ছাউনি গুলি। যেটাকে গ্রাম বাংলার মানুষ সইয়ে গাড়ী বলে। কাঠ ও বাঁশের তৈরি গরুর গাড়ীগুলি অধিকাংশ লোক জীবন জীবিকার তাগিদে ভাড়ায় ব্যবহার করা হত। মধ্যবিত্ত ও ধনি শ্রেনীর লোকেরা ঐতিহ্য ও ব্যক্তিত্বের জন্য নিজেরা কর্মচারী রেখে গাড়ী ব্যবহার করতো। যশোরের বিভিন্ন উপজেলায় এক সময় এই গরুর গাড়ি তৈরি করে অনেক পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করতো। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গরুর গাড়ী তৈরির মিস্ত্রিদের ছিল ব্যস্ততা। দম ফেলার সময় থাকতো না তাদের। আজ যান্ত্রিক যুগের দাপটে সে সব কেবলই স্মৃতি। এখন আর মিস্ত্রি পাড়ায় বাজে না হাতুড়ির শব্দ। খুলনা বিভাগে মাত্র ২/১টি স্থানেই কেবল গরুর গাড়ির তৈরির কারিগর টিকে আছে। চৌগাছা উপজেলার তৃনমূলের গ্রামে এখনো ২/১টি গরুর গাড়ি দেখা যায়। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান