হাওরের ক্ষতিগ্রস্তদের পর্যাপ্ত খাদ্য দেওয়ার ‘আহ্বান সিপিবি-বাসদের
রফিক আহমেদ : বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) নেতারা হাওরের দায়িত্ব পালনে অবহেলাকারী দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, ঠিকাদার, জনপ্রতিনিধিদের দ্রুত বিচার ও ক্ষতিগ্রস্তদের পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ করার আহবান জানান। গতকাল রোববার সকাল ১১টায় রাজধানীর পুরানা পল্টন মুক্তিভবনের প্রগতি সম্মেলন কক্ষে সিপিবি-বাসদ জোটের শীর্ষ নেতা সিপিবি সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এক সংবাদ সম্মেলনের এ আহবান জানান।
সিপিবি-বাসদের কেন্দ্রীয় একটি প্রতিনিধি দল গত ২ ও ৩ মে সুনামগঞ্জের শনির হাওর ও হাইলের হাওর অঞ্চলে পরিস্থিতি সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করেন। উক্ত সফরের অভিজ্ঞতা ও হাওরবাসীর বাস্তব অবস্থা তুলে ধরার জন্য সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য রাখেন সিপিবি-বাসদ জোটের শীর্ষ নেতা হাওর পরিদর্শন টিমের প্রধান বাসদ সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সিপিবি বাসদ জোটের শীর্ষ নেতা সিপিবি সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিপিবি’র কেন্দ্রীয় নেতা ও হাওর পরিদর্শন টিমের অন্যতম সদস্য কমরেড সরদার রুহিন হোসেন প্রিন্স। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিপিবি প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পরিদর্শন টিম সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাসদ কন্দ্রেীয় কমিটির সদস্য পরিদর্শন টিমের সদস্য কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য ও পরিদর্শন টিম সদস্য কমরেড আব্দুল্লাহ-আল কাফি রতন, পরিদর্শন টিম সদস্য ও বাসদ নেতা কমরেড নিখিল দাস প্রমুখ।
মুজাহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তরে বলেন, প্রতি বছরই হাওরে নানা ধরণের বিপর্যয় হয় কিন্তু এবারের বিপর্যয় অন্যান্যবারের তুলনায় ভয়াবহ। কারণ উত্তর পশ্চিম-পশ্চিম অঞ্চলের ৬টি জেলার ৬২টি উপজেলার ৫৪১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫১৮টিই প্লাবিত হয়।
এতে তলিয়ে যায় মোট ২ লাখ ১৯ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমির বোরো ধান। ২৪ লাখ পরিবারসহ প্রায় ২ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি হাওর সমস্যাকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে প্রকৃতি-পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ-স্বল্প মেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করার আহ্বান জানান।
খালেকুজ্জামান বলেন, প্রতি বছরেই হাওরে ৫-৩০% ক্ষতি হয়। কিন্তু এবার প্রায় ৯০% হাওর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফলে বিষয়টিকে প্রতিবারের ন্যায় দেখার কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন, আমরা ২দিন হাওরবাসির মধ্যে ছিলাম। প্রত্যক্ষ করেছি তাদের ক্ষতির ভয়াবহতা। যে কারণে আমরা হাওর অঞ্চলকে ‘দুর্গত এলাকা’ ঘোষণা করার দাবি করছি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কমরেড খালেকুজ্জামান বাংলাদেশের বৃহত্তম হাওর টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দুরে ভারতের মেঘালয়ে অবস্থিত ইউরেনিয়াম খনির থেকে বর্জ্য এসে হাওরের পানি দুষিত করছে কিনা? তার প্রভাবে মাছ, হাঁস মরছে কিনা তার প্রকৃত তথ্য দেশবাসীকে জানানো এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে আরোও সতর্ক ও ভারত সরকারের সাথে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনারও আহ্বান জানান।