দুই পুলিশ আহত বাড়ির মালিক ও তার ছেলে আটক ঝিনাইদহে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান নব্য জেএমবির ২ জঙ্গি নিহত
ইসমাঈল হুসাইন ইমু এবং সুলতান আল একরাম (ঝিনাইদহ) : ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় ‘জঙ্গি আস্তানা’য় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে সন্দেহভাজন দুই জঙ্গি নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে তুহিন নামের একজন রয়েছে। আহত হয়েছে কাউন্টার টেরোরিজমের এডিসি নাজমুল ইসলাম ও পুলিশের এসআই মহসিন। তাদের মধ্যে নাজমুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনা হয়েছে। গতকাল রোববার ভোর থেকে উপজেলার এসবিকে ইউনিয়নের বজ্রাপুর গ্রামে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি ঘিরে অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দুপুরে শেষ হয় অভিযান। অভিযানে নব্য জেএমবির দুই সদস্য নিহত হয়। এছাড়া এ ঘটনায় দুই পুলিশ আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অভিযান চালানোর আগে জঙ্গি আস্তানার আশপাশের এলাকায় গতকাল সকাল থেকে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি বলেন, অভিযানে দুই জঙ্গি নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন ঘরের বাইরে পুলিশের সঙ্গে গুলিবিনিময়ে নিহত হয়। আরেকজন ঘরের ভেতরে আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণে নিহত হয়। নিহত দুজন নব্য জেএমবির সদস্য। তাদের মধ্যে একজনের নাম তুহিন বলে জানা গেছে। জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে যে বাড়ি ঘিরে অভিযান চালানো হয়, তার মালিকের নাম জহুরুল ইসলাম বলে স্থানীয় লোকজন জানান। জহুরুলসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পাশের বাড়ির মালিক হাসেম আলী বলেন, ভোর পাঁচটার দিকে ঘুম থেকে উঠে আশপাশে প্রচুর পুলিশ দেখতে পান তিনি। একপর্যায়ে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ওই বাড়ি থেকে তারা গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
এদিকে বাড়ির মালিক জহিরুল ইসলাম সম্পর্কে বেশকিছু তথ্য জানা গেছে। স্থানীয়রা জানান, জহিরুলের মূল বাড়ি কয়েক মাইল দূরের রহমতপুর গ্রামে। তারা বজ্রাপুর গ্রামে ‘নওদা’ বা আগন্তুক। ১৩-১৪ বছর আগে তারা এই গ্রামে এসে বাড়িঘর বেঁধে বসবাস শুরু করেন। এখানে তাদের কোনো জমিজমা ছিল না।
বজ্রাপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন ও গৃহিণী ফাতেমা বেগম জানান, জহিরুল ইসলামের বাবার নাম নুরু বাঁশিওয়ালা। তিনি যাত্রাদলে বাঁশি বাজাতেন। জহিরুল ফুসকার ব্যবসা করতেন। বাড়িতেই ফুসকা বানাতেন। এখানে আসার পর পরই জহিরুল বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই পাল্টাতে থাকেন তিনি। তার স্ত্রী বাড়ির বাইরে বেরোতেন না। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। প্রতিবেশি বা গ্রামের লোকজনের সঙ্গে তাদের তেমন কোনো যোগাযোগ হতো না। লোকজন তাদের বাড়িও যেত না। জহিরুল আহলে হাদিসের অনুসারী। তাদের নামাজের কায়দা ভিন্ন। এটা গ্রামের লোকজন জানত। তবে গ্রামের লোকজন তাদের ভালো বলেই জানত।
সম্পাদনা : জাফর আহমদ