প্রভাবশালীরাই যখন অপরাধ প্রবণ
মিঠুন মিয়া
মানবশিশু নিষ্পাপ ও পূত-পবিত্র হয়ে ধরণীতে আসে। সে অর্থে মানুষ অপরাধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। জন্মের পর মানবশিশুটি কতটা পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে বেড়ে ওঠবে, তা নির্ভর করে তার চারপাশের পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সমাজ ব্যবস্থার উপর। অর্থাৎ যথাযথ সামাজিকীকরণের মাধ্যমে একটি শিশু পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে ওঠে। প্রত্যকে ভালো-মন্দ ও ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য নির্ধারণ করে সত্য-সুন্দর, নীতি-নৈতিকতা, সামাজিক মূল্যবোধ, বিবেক এবং মনুষ্যত্ববোধসম্পন্ন মানুষ হয়ে সমাজের হাল ধরবেÑ এমনটিই কাম্য। আমাদের সমস্ত আয়োজন মূলত সে লক্ষ্যেই। তাহলে সমাজে শান্তি ও কল্যাণ বিরাজ করত। কিন্তু চিত্র ভিন্ন। সমাজ বাস্তবতায় সেই নিষ্পাপ শিশুটিই হয়ে উঠছে অপরাধী। এজন্য অনেকে অবশ্য সামাজিকীকরণ, পরিবেশ, পরিস্থিতি, শিক্ষাসহ নানা বিষয়কে দায়ী করেন। কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে প্রভাবশালী বা তাদের ছেলে-মেয়েরাই কেন অপরাধ প্রবণ হয়ে উঠছে? কিন্তু চুরি, ডাকাতি, হত্যা, ছিনতাই, ধর্ষণ, প্রতারণা, অপহরণ, রাষ্ট্রদ্রোহীতা, আক্রমণ, মানহানিসহ নানা অপরাধ এমনসব ব্যক্তিদের বা তাদের সন্তানদের দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে যাদেরকে আমরা সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পেশাগতভাবে প্রতিষ্ঠিতই বলে জানি। তাদের সামাজিকীকরণ ফুটপাতে বেড়ে ওঠা শিশুটির সামাজিকীকরণ থেকে ভিন্ন। প্রতিনিয়ত বেড়ে যাচ্ছে প্রভাবশালীদের অপরাধমূলক কর্মকা-ের পরিধি। সম্প্রতি রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে জš§দিনের অনুষ্ঠানে ডেকে নিয়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফায়েত আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা হয়ছে। এদিকে ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উপর মহলে মোটা অংকের টাকা খরচের অভিযোগ উঠে। প্রভাব আর প্রতিপত্তির জোরে প্রভাশালীরা অপরাধে লিপ্ত হয়। ক্ষমতা আর অর্থের বলয়ে তারা অপরাধ থেকে মুক্তিও পেয়ে যায়।
লেখক: প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
সম্পাদনা: আশিক রহমান