বন্ধ হচ্ছে সুনামগঞ্জের ৩ শুল্ক বন্দর
আহমেদ রমজান,সুনামগঞ্জ : অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সরকারের রাজস্ব আয়ের অন্যতম ভান্ডার সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার তিন শুল্কবন্দরের (বড়ছড়া-চারাগাও-বাগলী) কয়লা আমদানি কার্যক্রম। ভারতীয় অভ্যন্তরীণ কারণে আগামী ৩১ মে থেকে উক্ত বন্দর দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য আমদানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এতে১ বেকার হয়ে পড়বে ৮ শতাধিক আমদানিকারক ও বন্দর সংশ্লিষ্ট অর্ধ লক্ষাধিক শ্রমিক। তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি হাজী আলকাছ উদ্দিন খন্দকার, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের ও কোষাধ্যক্ষ জাহের আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, ভারতীয় অভ্যন্তরীণ কারণে আগামী ৩১ মে থেকে এই তিন বন্দরের আমদানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। কবে নাগাদ আমদানি কার্যক্রম চালু হবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না ওপারের ব্যবসায়ীরা। বড়ছড়া শুল্কবন্দরের রেভিনিউ অফিসার মো. বিল্লাল চৌধুরী বলেন, সুনির্দিষ্ট সময়সীমা শেষ হওয়ায় ৩১ মে থেকে কয়লা আমদানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ‘হাসান কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ এর সভাপতি শামছুল আলম আখঞ্জি টিটু, সিনিয়র সহ-সভাপতি আহমদ কবির ও সাধারণ সম্পাদক সাহাজ উদ্দিন সাজন বলেন, এমনিতেই হাওরের ফসলডুবির কারণে প্রতিনিয়ত বাড়ছে হাহাকার, অন্যদিকে বন্দরগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনির্দিষ্টকালের জন্য।
এতে করে বন্দর সংশ্লিষ্ট অর্ধ লক্ষাধিক শ্রমিক পরিবারে নতুন করে নেমে আসবে ঘোর অন্ধকার। বিষয়টি এখন মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রসঙ্গত, ভারতের ন্যাশনলাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল (এনজিটি) নামক একটি পরিবেশবাদী সংগঠন পরিবেশ বিপর্যয়জনিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৪ মে ভারতীয় আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। এরপর ১৬ মে থেকে কয়লা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে এই তিনটি বন্দরসহ সিলেটের দুুটি বন্দর দিয়ে কয়লা আমদানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ে। এরই প্রেক্ষিতে প্রায় ১১ মাস বন্ধ থাকার পর ২০১৫ সালের ১০ ও ১১ জানুয়ারি দুই দিন কয়লা রফতানি করে আবার বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে একই বছরের ১৫ এপ্রিল চালুর পর ১লা জুলাই থেকে ৩য় বারের মতো বন্ধ হয়ে যায় বন্দর তিনটির কার্যক্রম। পরে ২০১৬ সালের প্রথম মাসে চালুর পর ১৫ মে ফের বন্ধ হয়ে যায় আমদানি কার্যক্রম। সর্বশেষ আদালত কতৃক ৬ মাস সময়সীমার জন্য আমদানির উপর আদেশ দিলে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হয় আমদানি কার্যক্রম। নির্দিষ্ট সময়সীমা আগামী ৩১ মে শেষ হবে। ফলে সেদিন থেকে আবারও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বন্দরের কার্যক্রম। সম্পাদনা: মুরাদ হাসান