‘রামপাল প্রকল্প’, বিশ্ব ঐতিহ্য থেকে বাদ যাবে সুন্দরবন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স
সরকার বলছিল, আমাদের কাছে নাকি বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্ত নেই তারা এমন প্রযুক্তি আনবে যা দিয়ে এটার দূষণ দূর করা সম্ভব হবে। আমরা বৈজ্ঞানিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছি। সর্বশেষ বিশ্ববিখ্যাত যারা এ বিষয়ে এক্সপার্ট তাদের রিপোর্ট পেয়েছি। আপনারা জানেন যে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় মাধ্যমে এই রিপোর্টগুলো আমরা জনসম্মুখে প্রকাশ করে দেখিয়েছি যে বিশ্ববিখ্যাত বৈজ্ঞানীরা এটা পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, এটা অবশ্যই সুন্দরবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বরং আমরা প্রথম দিকে ক্ষতি যতটুকু বুঝেছিলাম আমরা দেখলাম তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এসব বিবেচনায় আমরা সরকারকে বারবার অনুরোধ করেছি এই ধরনের প্রকল্প মানে কয়লাভিত্তিক প্রকল্প করা চলবে না, যদি প্রয়োজন হয় কয়লাভিত্তিক বাদ দিয়ে অন্য কোনো, যেমন সৌর বা অন্য কোনো প্রকল্প করা গেলে সেটা যাচাই করে এবং নিয়ম-কানুন মেনে করা গেলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আর একান্তই যদি কয়লা দিয়ে করতেই হয় তাহলে অন্য জায়গায় এটা সরিয়ে নিয়ে, চুক্তি যেটা আমাদের দেশের স্বপেক্ষে হয় এই ধরনের চুক্তি করে করা যেতে পারে।
আমি সর্বশেষে এই মুহূর্তে যখন কথা বলছি লক্ষ্য করছি, এই উদ্বেগ শুধু আমাদের না, এটা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের। ইউনেস্কো তো ২০১৩ সালে, ২০১৪ সালে, ২০১৬ সালে এই তিন বছর পরপর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, এ ধরনের প্রকল্প সুন্দরবনকে ধ্বংস করবে। এই প্রকল্প বাতিল করো অথবা সরিয়ে ফেলো। কিন্তু সরকার এটা করেননি। বরং গত বছর মার্চ মাসে সরকারের একটা প্রতিনিধি দল ইউনেস্কোর সঙ্গে কথা বলে। ইউনেস্কো এর আগে অনেকবার সুন্দরবন সরেজমিনে দেখতে আসতে চেয়েছিল। তাদেরকে সময় দেওয়া হয়নি বলে আমরা শুনেছি। পরবর্তীতে সময় দেওয়া হলেও গত বছর মার্চে ইউনেস্কোর একটা টিম এখানে সফর করে। সেই সফরে ইউনেস্কোর সঙ্গে আমরা যারা আন্দোলনকারী তাদের সঙ্গে ইউনেস্কোর টিমের কথা বলার কথা ছিল কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে এমনভাবে টাইট সিডিউলে রাখা হয়েছিল তারা কোনো কথা বলতে পারেনি। এরপরে আমরা দেখলাম মার্চ মাসে তারা সফর করে যাওয়ার পরে, তারা তাদের পুরনো অবস্থান বদলালো না। ওই সময় সরকার তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছে তারা কি কি করবে যাতে করে সুন্দরবন ধ্বংস হবে না। (চলবে-০২)
পরিচিতি: কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সিপিবি
মতামত গ্রহণ: সাগর গনি
সম্পাদনা: আশিক রহমান