জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্থান, বিশ্বে মার্কিন নেতৃত্বকে দুর্বল করবে
অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন
প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরে দাঁড়ানোর ঘোষণাটি আগে থেকেই অনুমেয় করা যাচ্ছিল। কেননা নির্বাচনে জয়ী হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মশগুল হয়ে পড়েছেন। তার ফলশ্রুতি হলো প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনেক বড় ধরনের একটি সিদ্ধান্ত।
জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি খুবই দুঃখজনক এবং হতাশাব্যঞ্জক। এ সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বা নেতৃত্বের জায়গাটি বড় ধরনের ধাক্কা খাবে। বড় রকমের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা নিয়ে সারাবিশ্ব যেখানে সোচ্চার সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো যখন প্যারিস জলবায়ু চুক্তিটি অনেক আলোচনার পর যখন সার্বজনীনভাবে গৃহীত হওয়ার উপক্রম নিয়েছে। সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের চলে যাওয়া মার্কিন নেতৃত্বের জায়গাটিকে দুর্বল বা বিচ্ছিন্ন করে দিবে। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতিকে আবারও প্রশ্নের সম্মুখীন করবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। সেদিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র হলো গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণকারীর শীর্ষ দেশ। সেই দেশটি যখন এ রকম একটি চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল তখন স্বাভাবিকভাবেই জলবায়ুর চুক্তিটির কার্যকারিতা চাপের মধ্যে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তি থেকে বের হয়ে গেলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশ এখনো চুক্তির পক্ষে। তারা তাদের মতো কাজ করবে এ রকম মনোভাব পোষণ করছে। তবে সারাবিশ্বে আবহাওয়া বা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পিছু হঠা বা বিশ্বের জনমতকে উপেক্ষা করা মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে বিশেষ করে ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য নেতৃত্বের বিষয়টিকে নতুন চ্যালেঞ্জ বা প্রশ্নের মুখোমুখি করল। এমনকি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে কাছে না পাওয়ায় চুক্তিটিকে কিছুটা দুর্বল করলেও চীন ও জার্মানি একসঙ্গে চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন। নিঃসন্দেহে চীন ও জার্মানিসহ অন্যান্য দেশগুলো একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্তের বিষয়টি চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
পরিচিতি: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ: বায়েজিদ হোসাইন/সম্পাদনা: আশিক রহমান