লংগদু সহিংসতা : নেপথ্যে কে বা কারা?
শাহরিয়ার কবীর
পাহাড়ি বাঙালিদের মধ্যে সহিংসতা, সংঘর্ষ অনাকাক্সিক্ষত ও অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। পাহাড়ি বাঙালিদের মধ্যে একটা টেনশন উত্তেজনা সবসময় সেখানে ছিল, এখনো রয়েছে। যুবলীগ কর্মীর হত্যাকে কেন্দ্র করে যারা পাহাড়িদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল, তারা শান্তি চায়? চায় না। এটা খুবই দুঃখজনক। ঘটনার পুরোটাই তদন্ত হওয়া দরকার। যারা পাহাড়ি বিরোধী বাঙালি, মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি, বিএনপি সমর্থকরাই মূলত এর জন্য দায়ী।
পাহাড়িদের অনেকেই আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। আওয়ামী লীগ তো তাদের উপর হামলা করতে পারে না। পাহাড়িদের সঙ্গে বিরোধ হচ্ছে জামায়াত-বিএনপির। সেখানে ভোটের রাজনীতি আছে, ক্ষমতার আধিপত্য বিস্তারের ব্যাপার আছে। এই জন্য জামায়াত-বিএনপি বাঙালিরা অনুসারীরা সবসময় সুযোগ পেলেই পাহাড়িদের উপর আক্রমণ চালায়।
আমরা ইতোমধ্যেই দেখেছি, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর হয়তো সেনাবাহিনীর নির্যাতনটা কমেছে। সামরিক বাহিনীর একটা নির্যাতন ছিল তাদের উপর। এখন সেটা অনেকটাই কমেছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। আওয়ামী লীগও একটা তদন্ত করতে পারে। এমন ঘটনা কেন এই সময় ঘটল, এতে কারা লাভবান হবে তা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বের করা দরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ১৯৯৭ সালে ক্ষমতায় এসে সর্বপ্রথম পাবর্ত্য শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। এই শান্তিচুক্তির প্রবল বিরুদ্ধচারণ করেছিল জামায়াত-বিএনপি। বিএনপির চেয়ারপারসন প্রকাশ্যে বলেছিলেন, এই শান্তিচুক্তির ফলে বাংলাদেশের এক দশমাংশ ভারতের অংশ হয়ে গেছে, এই চুক্তি আমি মানি না। এই শান্তিচুক্তির বাস্তবায়নের প্রধান বাধাটা জামায়াত-বিএনপি সমর্থকরা, তারা এই শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করতে দিবে না। প্রশাসনের মধ্যে তো জামায়াত-বিএনপির লোক আছেই। ফলে শেখ হাসিনা যখন একটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির ইঙ্গিত দেন, যখন নানা অপচেষ্টা বানচাল করার বহুমাত্রিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তখন এরকম ঘটনা।
কোনো একটা সুযোগ পেলেই পাহাড়িদের উপর আক্রমণ চালানো হয়। পাহাড়িরা তো আর জামায়াতের পলিটিক্স দেখবে না, আওয়ামী লীগের পলিটিক্স দেখবে না। তারা সাধারণভাবে বাঙালিরা পাহাড়িদের উপর হামলা করছে। এ বিষয়ে সঠিক ও কার্যকর পদক্ষেপ মানুষ আশা করছে সরকারের কাছে। আমরা আশা করছি, সম্প্রতির বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান।
পরিচিতি: ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ/সম্পাদনা: আশিক রহমা