অগ্নিসংযোগের ঘটনা নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে
আফসান চৌধুরী
বাংলাদেশের আদিবাসীদের উপর বিভিন্ন সময়ে নানা রকমের নির্যাতন আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। পাহাড়ি জনপদে অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি আমাদের মাঝে নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
পাহাড়ি আদিবাসীদের প্রায় দু’শ বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আর এ অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি যে নিজ দেশের লোকের দ্বারা সম্পন্ন হয়েছে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আমাদের দেশে কী এমন কোনো ব্যবস্থা নেই, আমরা এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করতে পারি? আদিবাসীদের এই করুণ পরিস্থিতির থেকে উত্তরণের জন্য কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় না কেন? এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। পাহাড়ি আদিবাসী নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা নেই, সমাজের সুবিধাভোগী প্রভাবশালী কিছু মানুষ ফায়দা নেওয়ার জন্যই এ ধরনের কাজ করে থাকে। পাহাড়ী অঞ্চল নিয়ে গবেষণার কারণে আমি নিজেও বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছি।
আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রনের জন্য ওই এলাকায় সেনাবাহিনীর একটি ক্যান্টনমেন্ট রয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব ছিল ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কিন্তু আমরা দেখলাম চার’শ মানুষের নামে মামলা করা হয়েছে। অপরাধীদের যদি আইনের আওতায় আনা না যায় তাহলে মামলা করে কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না।
আদিবাসীদের, সাঁওতালদের উপর নির্যাতন, এটা আমাদের কাছে খুব বড় কিছু মনে হচ্ছে না। কেননা আদিবাসীদের আমরা এখনো বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে মেনে নিতে পারিনি। নাগরিক হিসেবে না মেনে নেওয়ার জঘন্যতম নিদর্শন হচ্ছে, এই পাহাড়ি জনবসতিতে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি।
আমাদেরকে আদিবাসীদের জীবন ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে। এই পরিস্থিতি উন্নয়ন করতে হলে বাঙালি এবং পাহাড়িদের অবশ্যই যৌথ পরিসরে কাজ করতে হবে। আর সেই কাজটি খুব একটা করা হয় না বিধায় অন্যরা আক্রমনের সুযোগ পায়। আমি নিজে প্রত্যক্ষ করেছি, যেসব জায়গায় পাহাড়ি এবং বাঙালি মিলেমিশে একসঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করে সেখানে সংঘর্ষের ঘটনা অনেক কম।
পরিচিতি: সাংবাদিক ও গবেষক
মতামত গ্রহণ: সাগর গনি
সম্পাদনা: আশিক রহমান